প্রকাশিত: Thu, Mar 2, 2023 3:26 PM
আপডেট: Thu, Jun 26, 2025 3:14 PM

স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক ব্যক্তিত্ব, আস্থা, বিশ^াস ও সম্পর্কের সম্প্রসারণ

নাদেরা সুলতানা নদী : আমাদের মাঝে খুব কম মানুষের মাঝেই ধারণা পরিষ্কার আছে যে বিয়ের পর মেয়েদের স্বামী-সন্তান, পরিবার ছাড়া আরও কোথাও কোনো মায়া, টান, বন্ধন বা স্বাভাবিক সম্পর্ক থাকতে পারে জীবনেরই আহ্বানে। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলছি। আপনি দেখবেন, আমাদের নানী, দাদী, মা-মাসী খালা পিসিদের জীবনধারায় দেখেছি, এমন অনেকেই আছেন, বিয়ের পর তাঁদের জীবনের স্কুল, কলেজ বা পাড়ার বন্ধুদের কারো সঙ্গে তেমন কোনো যোগাযোগই থাকেনি। অনেক বছর পর দেখা হলে, যাদের ঘিরে একসময় ছিল আলাদা কোনো মায়া, যাপিত জীবনের চাপে অনেকেই সেটা ভুলেই যায় বা ভুলে যেতে বাধ্য হয় সঙ্গীর তীব্র রোষানলে। এমন অনেক জীবনও আছে, নিজের পরিবার, মা-বাবা, ভাই-বোন বা অন্য আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারে না। কারণ বিয়ের পর তার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা বা স্বামী তা চান না। 

সেই সময় থেকে হয়তো অবস্থা অল্প বিস্তর বদলাতে পেরেছি আমরা। তারপরও দুঃখজনক সত্যি হচ্ছে, খুব কম জীবনসঙ্গীই এই সময়ে এসেও সঙ্গীর বন্ধুর সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক মেনে নেয়। স্বামীরা পারেন না স্ত্রীদের ব্যক্তিত্বের উপর আস্থা রাখতে, তাই স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুর সঙ্গে খুব সাবলীল সম্পর্ক অনেকের পক্ষেই আর রাখা সম্ভব হয়ে উঠে না। শুধু যে স্বামী তা না, স্ত্রীরা আরও অনেক বেশিই এগ্রেসিভ এই বিষয়ে, স্বামীর কোনো বান্ধবী মানেই নানান বাঁধা, কেন যেন স্বামীর উপর সরাসরি রাগ ঝারতে না পারলেও অনেকেই কোনো না কোনো ভাবে স্বামীর বান্ধবীর সঙ্গে অনেক সময় খারাপ ব্যবহার করে ফেলেন। 

আমাদের, মানে বিশেষত মেয়েদের যে মা-বাবা, পরিবার, স্বামী-সন্তান এবং অন্য স্বজনদের সঙ্গে যে রকম সম্পর্ক তার বাইরে বন্ধু, কলিগদের সঙ্গে অন্য রকম আন্তরিক সম্পর্কের এক পৃথিবী থাকে বা থাকতে পারে, এই সত্য অনেক মানুষ জীবদ্দশায় অনুধাবন করে না এবং সঙ্গীর জীবনকে করে তোলে অনেক ক্ষেত্রেই নির্বাসিত দূর দ্বীপবাসিনী। এই কষ্ট অনেকেই চাপা দিয়েই কাটিয়ে দেয় এক জীবন। এই উদারতা ধারণ করা খুব কঠিন, এটা মন থেকে অনেকেই লালন করতে পারে না বোধ হয়। মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া। ফেসবুক থেকে